যুদ্ধবিধ্বস্ত অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গত বুধবার ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা একদল ফিলিস্তিনির ওপর কোনো কারণ ছাড়াই গুলি চালায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনী। এতে ২০ জন নিহত হয়।

এদিকে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে জর্জরিত গাজা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। ব্রাসেলস বলছে, যুদ্ধপীড়িত অঞ্চলটিতে ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, গাজায় ত্রাণ সরবরাহে বাধা দিতে ইচ্ছাকৃতভাবেই স্থলপথগুলো বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল হ্যাগারি বলেন, ‘আমরা অঞ্চলটিকে (গাজা) ত্রাণে ভাসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। আরও স্থলপথ খুলে দেওয়া হতে পারে।’ এর আগে আইডিএফ জানিয়েছিল, গত মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ ইসরায়েলের কিব্বুতজ বেয়েরির কাছে গাজা সীমান্তের ৯৬তম গেট দিয়ে খাদ্যবাহী ছয়টি লরি প্রবেশ করেছে।

এর আগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার একটি ত্রাণ বিতরণ পয়েন্টে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলি সৈন্যদের নির্বিচার গুলিতে অন্তত ১১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। আহত হয়েছিল আরও সাত শতাধিক ফিলিস্তিনি।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত পাঁচবার ত্রাণের গাড়ি ও ত্রাণ নিতে আসা মানুষের উপর ইসরাইলি বাহিনীর এলোপাতারি গুলিবর্ষণে প্রায় দেড়শ’ ফিলিস্তিনি নিহত হন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার তথ্য মতে, গাজা শহরে ত্রাণপ্রার্থীদের ওপর ইসরাইলি বাহিনী এমন হামলার ঘটনা নতুন নয়। এর আগে গত বছরের ৭ই নভেম্বর ত্রানের গাড়িবহরে হামলা ও ২৯শে ডিসেম্বর ত্রাণের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ইসরাইলি সেনারা। এসময় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে এর দায় নিতে অস্বীকৃতি জানায় ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।